রেকর্ড গড়া ম্যাচে রেকর্ড রানের জয় বাংলাদেশের। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম খেলায় ৩৩৮ রান করে ১৮৩ রানের বিশাল জয় পায় স্বাগতিকরা।
শনিবার (১৮ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাটিংয়ে নেমে সাকিব আল হাসান (৯৩), তৌহিদ হৃদয় (৯২), ও মুশফিকুর রহিমের (৪৪) ব্যাটিং তাণ্ডবে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রানের পাহাড় গড়ে বাংলাদেশ।
ওয়ানডে ক্রিকেটে এটাই বাংলাদেশ দলের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। এর আগে ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৬ উইকেটে ৩২৯ রান করেছিল টাইগাররা।
শনিবার (১৮ মার্চ) বাংলাদেশর রেকর্ড রান তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে আয়ারল্যান্ড। কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬০ রান করা আইরিশ দলটি এরপর মাত্র ১৬ রানের ব্যবধানে ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে যায়।
দলকে ব্রেকথ্রু উপহার দেন সাকিব আল হাসান। তার শিকার হয়ে ফেরেন স্টিপেন ডোহেনি। এরপর জোড়া আঘাত হানেন পেসার এবাদত হোসেন। তার শিকার হয়ে ফেরেন পল স্টারলিং ও হ্যারি টাকার।
এরপর আয়ারল্যান্ড শিবিরে আঘাত হানেন পেসার তাসকিন আহমেদ। তার জোড়া শিকারে পরিণত হন অ্যান্ড্রুবালর্বিনি ও লোকান টাকার।
কার্টিস ক্যাম্পারকে এলবিডব্লি করে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। ক্যাম্পারের মতো গ্যারেথ ডেনলিকেও একই ভাবে ফেরান নাসুম। অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে অ্যান্ডি ম্যাকব্রিনকেও ফেরান নাসুম।
আর নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে মার্ক আদিরকে ফেরান এবাদত হোসেন। তার বিদায়ে ২৯ ওভারে ১৪৪ রানে ৯ম উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড।
৫ ক্যাচে রেকর্ড ছুঁলেন মুশফিক : আয়ারল্যান্ডের প্রথম তিন উইকেটেই ক্যাচ নিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। মাঝে বিরতি দিয়ে পরে গ্লাভসে নিলেন আরও দুটি। ইবাদত হোসেনের বলে মার্ক অ্যাডায়ারের ক্যাচটি নিয়েই ছুঁলেন রেকর্ড।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে কিপারদের এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ক্যাচের রেকর্ড ৫টি। ২০০৬ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে প্রথম ৫ ক্যাচ নেন খালেদ মাসুদ। ২০১৫ সালে ভারতের বিপক্ষে এই রেকর্ডে ভাগ বসান মুশফিক। প্রায় ৮ বছর পর আবারও ৫ ক্যাচ নিলেন তিনি।
২৯ ওভারে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ১৪৪ রান। জর্জ ডকরেল ৩৭ রানে খেলছেন। তবে বড় জয়ই দেখছে বাংলাদেশ।
তাসকিনের টানা ১৬ ডট : পাওয়ার প্লেতে টানা তিন ওভার বোলিং করে থেমেছিলেন তাসকিন আহমেদ। দিয়েছিলেন কেবল ১০ রান। ১৬তম ওভারে আক্রমণে ফেরার পর তার বোলিংয়ে রানই নিতে পারছিল না আয়ারল্যান্ড।
দ্বিতীয় স্পেলে টানা ১৬ বল ডট দেওয়ার পর প্রথম রান দেন তাসকিন। ১৭তম বলে কভার ড্রাইভে চার মারেন জর্জ ডকরেল। মাঝের ১৬ বলে তাসকিন ড্রেসিং রুমে ফেরত পাঠান অ্যান্ড্রু বালবার্নি ও লরকান টাকারকে। সব মিলিয়ে ছয় ওভারে দুই মেডেনসহ স্রেফ ১৫ রানে তাসকিনের শিকার ২ উইকেট।
২০ ওভার শেষে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৮৯ রান। শেষ ৩০ ওভারে ৫ উইকেট হাতে রেখে তাদের প্রয়োজন আরও ২৫০ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩৩৮/৮ (তামিম ৩, লিটন ২৬, শান্ত ২৫, সাকিব ৯৩, হৃদয় ৯২, মুশফিক ৪৪, ইয়াসির ১৭, তাসকিন ১১, নাসুম ১১*, মুস্তাফিজ ১*; অ্যাডায়ার ১০-০-৭৭-১, হিউম ১০-০-৬০-৪, ম্যাকব্রাইন ১০-০-৪৭-১, ক্যাম্পার ৮-০-৫৬-১, টেক্টর ৬-০-৪৫-০, ডেলানি ৬-০-৫০-০)
আয়ারল্যান্ড: ৩০.৫ ওভারে ১৫৫ (ডোহেনি ৩৪, স্টার্লিং ২২, বালবার্নি ৫, টেক্টর ৩, ক্যাম্পার ১৬, ডকরেল ৪৫, ডেলানি ১, ম্যাকব্রাইন ০, অ্যাডায়ার ১৩, হিউম ২*; মুস্তাফিজ ৬-০-৩১-০, তাসকিন ৬-২-১৫-২, নাসুম ৮-০-৪৩-৩, সাকিব ৪-০-২৩-১, ইবাদত ৬.৫-০-৪২-৪)
ফল: বাংলাদেশ ১৮৩ রানে জয়ী
আর এ