আইন প্রণয়নে বৈধতা দেয়া ছাড়া আর কিছু করতে সংসদ সক্ষম নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের। তিনি বলেন, এই অবস্থার জন্য সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ দায়ী। আমি অনুচ্ছেদটি সংশোধনের দাবি জানাই।
সোমবার জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ অধিবেশনের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। উন্নয়ন কখনোই গণতন্ত্রের বিকল্প হতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার আইন প্রণয়নে উদ্যোক্তার ভূমিকা পালন করে। তবে সংসদের সম্মতি ছাড়া কোনো আইন প্রণয়ন সম্ভব নয়। এ কারণে প্রেসিডেন্ট তাঁর ভাষণে আইন প্রণয়নে সংসদ সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, সরকারি দল সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ। সংসদের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে সরকারের যেকোনো প্রস্তাবে সরকারি দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অটুট থাকে। ফলে সরকারি আইনে সরকারি দলের সম্মতি পায়
সরকারি দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে স্বাভাবিকভাবেই অনুমতি লাভ করে। সংশোধনগুলো গ্রহণ বা বর্জন সরকারের মর্জির ওপর নির্ভরশীল থাকে।
বিরোধী দলীয় উপনেতা বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের একটি সংশোধনী হওয়া আবশ্যক। সরকার গঠনের সময়, সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ও বাজেট- এই তিন বিষয় বাদে অন্য সব ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের নিজের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা দেয়া উচিত। যাতে সংসদ সদস্যরা নিজেদের জ্ঞানবুদ্ধি ও বিচার-বিবেচনা এবং এলাকার মতের প্রতিফলন ঘটিয়ে ভোট দিতে পারেন। এসময় উন্নয়ন কখনো গণতন্ত্রের বিকল্প হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন বিরোধীদলীয় উপনেতা।
তিনি বলেন, অনেকেই উন্নয়নকে গণতন্ত্রের বিকল্প হিসেবে দাঁড় করাতে চাচ্ছেন। কিন্তু উন্নয়ন কখনোই গণতন্ত্রের বিকল্প হতে পারে না। উন্নয়নের বিষয়ে বলা হচ্ছে স্থিতিশীলতা উন্নয়নের সহায়ক। কথাটি সত্য। তবে এটা যাঁরা বলেন, তাঁরা সরকার পরিবর্তন না হওয়াটাকে স্থিতিশীলতা মনে করেন। বস্তুত সরকার পরিবর্তন না হলে একধরনের স্থিতিশীলতা দেখা যায়। কিন্তু সেটা বাহ্যিক ও কৃত্রিম স্থিতিশীলতা। এই ধরনের স্থিতিশীলতা ভঙ্গুর ও অল্প দিনে এই ধরনের স্থিতিশীলতা অস্থিতিশীলতায় পরিণত হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে স্থিতিশীলতা হলো সরকার পরিবর্তন হলেও দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। স্থিতিশীলতা হলো সরকারের পরিবর্তনের সঙ্গে আর্থসামাজিক ও রাজনীতির কোনো ব্যাপক পরিবর্তন বা সংকট সৃষ্টি হবে না। তিনি বলেন, উন্নয়ন অর্থ অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয়। অবকাঠামোগত উন্নয়ন উন্নয়নের সহায়ক মাত্র। প্রকৃত উন্নয়ন হচ্ছে দেশ ও জনগণের সার্বিক জীবন মানের উন্নয়ন।
আর এ