বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

| ৬ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

সুদানে তিন দিনে নিহত ১৮৫, আহত ১৮০০: জাতিসংঘ

ডেস্ক অফিস

সুদানে তিন দিনে নিহত ১৮৫, আহত ১৮০০: জাতিসংঘ

সুদানে তিন দিনের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৮৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৮০০ জনেরও বেশি মানুষ। এমনটাই জানিয়েছে সুদানে কর্মরত জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি দল। চীন-রাশিয়া ও জি-৭ এর তরফ থেকে অবিলম্বে এই সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। এ খবর দিয়েছে আল-জাজিরা।

সুদানে নিযুক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি ভল্কার পার্থেস বলেন, বর্তমানে অবস্থা তরল পদার্থের মতো হয়ে আছে। ফলে ভারসাম্য কোথায় স্থানান্তরিত হচ্ছে তা বলা খুব কঠিন। দুই পক্ষই ট্যাংক, কামান ও ভারী অস্ত্র ব্যবহার করছে। যেসব এলাকায় যুদ্ধ হচ্ছে, তা বেশ ঘনবসতিপূর্ণ। আকাশে এখন যুদ্ধবিমান উড়ছে। আবার এগুলোকে ধ্বংসে ভূমি থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে মিসাইলও ছোঁড়া হচ্ছে।

দিন-রাত সর্বক্ষণ লড়াই অব্যাহত আছে।

নিউ ইয়র্কে থাকা সাংবাদিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলার সময় পার্থেস আরও জানান, কোনো পক্ষই শান্তি চায় বলে ইঙ্গিত দেয়নি। ফলে রাতারাতি যুদ্ধ থেমে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশ কম। এই সংঘর্ষের জেরে দেশে খাদ্য এবং জরুরি প্রয়োজনের জিনিসেরও সংকট শুরু হয়েছে। ২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানের ফলে সুদানে শাসন ক্ষমতার হাত বদল হয়েছিল। সেই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে ছিলেন দেশের সেনাপ্রধান আবদেল ফতাহ আল বুরহান এবং তার ডেপুটি মুহাম্মদ হামদান ডাগলো। তবে এখন তিনি সুদানের শক্তিশালী আধা সামরিক বাহিনী আরএসএফ-এর শীর্ষ পদে রয়েছেন। এখন এই আব্দেল ফতেহ এবং তার ডেপুটি মুহাম্মদ হামদান ডাগলোর মধ্যে ক্ষমতা দখলের সংঘাতের জেরে তীব্র সংঘর্ষে জড়িয়েছে সেনা এবং আধা সেনা বাহিনী। ধীরে ধীরে যে সংঘর্ষ গৃহযুদ্ধের আকার নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে।

এমনিতে সুদানে গৃহযুদ্ধ নতুন কিছু নয়। কিন্তু এবার দেশের দুই নিরাপত্তা বাহিনী যেভাবে সংঘর্ষে জড়িয়েছে, তা নজিরবিহীন। এই লড়াই দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলেও মত বিশেষজ্ঞদের। ইতিমধ্যেই সংঘর্ষে লাগাম টানতে কূটনৈতিক স্তরে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বর্তমানে সুদানের অধিকাংশ মানুষই রমজান মাসের রোজা পালন করছেন। তার মধ্যেই এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আতঙ্কে দিন কাটছে সুদানের রাজধানী খার্তুমের বাসিন্দাদের। রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে ট্যাঙ্ক, ঘন ঘন বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছে এলাকা। ধোয়ায় ঢেকে যাচ্ছে রাস্তাঘাট। শুধু তাই নয়, আকাশপথেও প্রতিপক্ষ শিবিরে হামলা চালানো শুরু হচ্ছে। চলছে গোলাগুলি।

হাতেগোনা যে কয়েকটি দোকান খোলা রয়েছে। সেখানেই জ্বালানি এবং পাউরুটির মতো খাবারের জন্য প্রাণ হাতে নিয়ে ভিড় করছেন বাসিন্দারা। তার মধ্যে আবার বিদ্যুৎ সংযোগও ঠিক মতো থাকছে না। এই প্রবল গোলাগুলি এবং আকাশপথে হামলার জেরে সুদানের রাজধানীতে একাধিক হাসপাতালও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে, খার্তুমের বেশ কিছু হাসপাতালে রক্তসংকট শুরু হয়েছে। ফলে, আহতদের চিকিৎসাও ঠিক মতো করা সম্ভব হচ্ছে না।

আর এ